মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
নোটিশ :
Wellcome to our website...

কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হলেন হাতকাটা বাবন !

বিশেষ প্রতিনিধি : / ৪৭১ Time View
Update : সোমবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৪

বনে গেলেন শত কোটি টাকার মালিক

সচিব পুত্রের বদৌলতেই সব সম্ভব

মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও নিচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। নিচ্ছেন রাষ্ট্রীয় অর্থ। ক্ষতি হচ্ছে জাতির। অর্থ বিনষ্ট হচ্ছে রাষ্ট্রের। প্রশিক্ষণ না নিয়ে এবং দেশ মুক্তির জন্য মক্তিযুদ্ধ না করেই তিনি বনে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা! এমন একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম শহিদুল ইসলাম খান বাবুল (বাবন) । তিনি বাংলাদেশ সচিবালয়ে কর্মরত তার ছেলে সিনিয়র সহকারী সচিব কামরুল ইসলাম খানের নাম ব্যবহার করে এবং মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙিয়েই কামিয়ে নিয়েছেন শত শত কোটি টাকা। হাতিয়ে নিয়েছেন মানুষের জমি-সম্পদ এবং নগদ অর্থকড়ি। তার এ অবৈধ জুলুম চলছে এখনও।
যেন উপর থেকে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে টাকায় ভর্তি হয়েছে বাবনের ঘরের সব গোলা। তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে নিরীহ ও সভ্য-শান্ত এলাকাবাসী এবং গোটা জাতি। নিজের ছেলে সচিবালয়ের উচ্চ আসনধারী হওয়ায় লাকায় জনশ্রুতি ওঠে টুণ্ডা বাবানও এখন মুক্তিযোদ্ধা! টুণ্ডা বাবনের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ১২ নং আগলা ইউনিয়নের চর মধুচরিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত নূরমোহাম্মদ খান এবং মায়ের নাম ছালেহা খাতুন। এলাকাবাসী জানায়, দরিদ্র ঘরের ছেলে বাবন ছোটবেলা থেকেই খুব ধুরন্ধর এবং আত্মসার্থপর। সে কখনো মুক্তিযুদ্ধ করেনি। এমনকি কোনো প্রশিক্ষণও নেয়নি। মুক্তিযুদ্ধের কোনো দলের সঙ্গেও একদিন দেখা করেনি। এলাকার নারী-পুষের বক্তব্য থেকে জানা যায়, যে ব্যক্তি ডাকাতি করতে গিয়ে হাত খোয়া যায়, সে আবার মুক্তিযুদ্ধ করে কিভাবে! সে তো এপাড়া থেকে ওপাড়ায়ও যায়নি কখনো। সে কিসের মুক্তিযোদ্ধা! এদেশে সবই সম্ভব । টাকার জোরে সবই করা যায় এখন। হাত কাটা বাবয়ের বড় কর্মকর্তা হওয়ায় টাকার জোরেই সে এখন মুক্তিযুদ্ধের আহত যোদ্ধা এবং সনদপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। আর সে কারণেই তিনি পাচ্ছেন রাষ্ট্রীয় ভাতা। ছেলের নাম ভাঙিয়ে এবং অবৈধ শক্তির জোরে কামিয়ে নিচ্ছেন অর্থ। নিয়ে নিচ্ছেন জ্ঞাতি- গোষ্ঠীসহ আশপাশের মানুষের জমি-সম্পদও। এলাকায় এখন এক আতঙ্কের নাম টুণ্ডা বাবন। বাবনের এক ছেলে তারিকুল ইসলাম খান তপু এলাকার চুরাইন আদর্শ ডিগ্রি কলেজের পাশে একটি ব্যাটারির দোকান চালায়। এখানে তার নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনী। এলাকার মানুষ এটিকে “হাফপ্যান্ট বাহিনী ” নামেই চেনে।এই বাহিনীর ভয়ে এলাকাবাসী থাকে কম্পমান। এ বাহিনী তাদের ইচ্ছেমতো চালায় এলাকায় তাণ্ডব। তপু তার দল নিয়ে যা খুশি তাই করে। কারণ, সচিবালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব ভাই কামরুল ইসলাম খান তো আছেই। তার জন্য সাত খুন মাফ। তপুর এ বাহিনীর ভয়ে এলাকায় ছোট-বড়, দোকানে মজুরি খাটতেন তার এখন শত শত কোটি টাকার সম্পদ নামে-বেনামে বাড়ছেই শুধু। এ কী করে সম্ভব। আশ্চর্য বনে যান তারা। মুক্তিযোদ্ধা টুণ্ডা বাবনের বিরুদ্ধে রয়েছে মানুষ খুনের গুরুতর অভিযোগও। এলাকাবাসী জানান, বাবন তার বড়ভাই আ. সালামকে হত্যা করেন ১৯৭৭ সালে। পরিস্থিতি সামলাতে থানা-পুলিশ হাত করে পার পেয়ে যান সে যাত্রাও। তিনি সাবেক এমপি আতা খানের মৃত বোন মনোয়ারা বেগম দধির কবরসহ ওই যায়গাটি দখলের জন্য কবর থেকে তার হাড়গোড় তুলে বস্তাবন্দি করে ইছামতী নদীতে ফেলে দিয়ে জনসমক্ষে প্রমাণ করেন এখানে কোনো কবর নেই কিংবা কোনো দিন ছিলও না। এরপর সে জায়গাটিও দখলে নিয়ে নেন হাট কাটা বাবন। এলাকাবাসী আরও জানান, তিনি খুব বদমেজাজি মানুষ। সামান্যতেই রেগে যান খুব। প্রতিশোধ নেন। এর প্রমাণ মেলে তার ব্যাটারির দোকানে কর্মরত এক কর্মচারী শামসুলকে বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে মৃত্যুদণ্ড শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে। এলাকার মানুষের মুখে মুখে এখন ভেসে বেড়ায়, যে বাবনকে অতি শিশু রেখে তার বাবার মৃত্যু হলো। দাদা এবং চাচাদের অধীনে থেকে খেয়ে না খেয়ে একটু বড় হয়ে পরের দোকানে কাজ করে কোনো রকম পেট চলত, সেই বাবনের এখন শত শত কোটি টাকা, জমি, আধুনিক বাড়ি, বিভিন্ন স্থানে দোকান, লন্ডনে ছেলে পাড়ানো এবং এক ছেলেকে বিসিএস ক্যাডার করে সিনিয়র উপ-সচিব বানানোর আর্থিক উৎস কি? কোথা থেকে আসে এ অর্থ! এলাকার স্থায়ী বাসিন্দাদের বক্তব্য থেকে জানা যায়, শহিদুল ইসলা খান বাবনের ছেলে কামরুল ইসলাম খান একজন সিনিয়র সহকারী সচিব। আর তার দোহাই দিয়েই পার পেয়ে যাচ্ছেন একটির পর একটি অপরাধ করেও। থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু বকর সিদ্দিক আৰু প্ৰায় দেড় ঘণ্টার সাক্ষাতের বক্তব্যে জানান, আমি তাকে কোথাও মুক্তিযুদ্ধ করতে দেখিনি। সে মুক্তিযোদ্ধা কি না আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। বাবন কোথায় মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু জানান, আমি তার ট্রেনিংয়ের কথাও জানি না। এলাকার নির্বাচিত চেয়ারম্যানও মুখ খুলতে নারাজ তার ব্যাপারে। অন্যান্য কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তার মুক্তিযুদ্ধ, প্রশিক্ষণ কোনো কিছুই আমরা জানি না। সে নিজেই মুক্তিযুদ্ধের আহ বিচারক। তারা আরও বলেন, এসব ব্যাপারে আবুকে জড়াবেন না। আবু কমান্ডার। বাবনের ছেলে কামরুল ইসলাম খান বর্তমানে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান একান্ত সচিব। সিনিয়র সহকারী সচিব। তার জোরালো ক্ষমতার কারণেই সব চলছে। বাবনের এত সব সম্পদ এবং যুদ্ধ না করেই মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সনদ অর্জন- এ সব কিছুর জন্যই ওই সিনিয়র সহকারী সচিব কামরুলের অঙ্গুলির জাদু কাজ করছে। এ নিয়ে আরও প্রতিবেদন বেরিয়েছে জাতীয় একাধিক দৈনিক পত্রিকায়। আসবে আর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর